About

গত ২৪ জুন ২০১৪ তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে শিক্ষাক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য পরশমণি ল্যাবরেটরী স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ, জনাব মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিন স্যারকে “শ্রেষ্ঠ শিক্ষক” হিসেবে সম্মাননা পদক ও সনদপত্র প্রদান করছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মাননীয় মন্ত্রী জনাব আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এম.পি।

শিক্ষা মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর অন্যতম। আধুনিক এ বিশ্বায়নের যুগে বিশেষকরে একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যে দক্ষ জনশক্তি এবং মজবুত সমাজ কাঠামো দরকার তার অন্যতম উপাদন হলো আদর্শ ও যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা। এ বিষয়টি যথাযথ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করেই শিক্ষার গুনগত মান অর্জণ এবং সার্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করার জন্য সরকারী এবং বেসরকারী পর্যায়ে বিভিন্ন রকম পরিকল্পনা এবং পদক্ষেপ নেয়া হয়ে থাকে। কিন্তু কঠিন বাস্তবতার নিরীক্ষে বিচার করলে দেখা যায় ঐ সমস্ত কার্যক্রম আদৌ তেমন সফলতা লাভ করতে পারছেনা। কোন কোন ক্ষেত্রে কিছুটা সফলতা অর্জণ করলেও শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য অর্থাৎ শিক্ষার্থীদেরকে আগামী সমাজ বিনির্মানের যোগ্য আদর্শ এবং নৈতিকতাবোধ সম্পন্ন আলোকিত মানুষ হিসাবে গড়ার উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ সফল হচ্ছেনা। যার ফলে ব্যক্তি, সমাজ এবং রাষ্ট্রীয় জীবনে নানা রকম অসংগতি ও সংকট দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা ভবিষ্যতে এক সংক্রামক মহামারী রুপে দেখা দিতে পারে। বর্তমানে শিক্ষা দেয়া ও নেয়া নিয়ে চলছে এক নৈরাশ্যজনক অবস্থা। যা এখন সকলের কাছে একটি পণ্য হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। আর এ হতাশার মূলে রয়েছে হাজারো পরিবার এবং সদস্যরা। একদিন যে ফুটফুটে সন্তানের আগমনে একটি পরিবারে সৃষ্টিহতো অনাবিল সুখ ও আনন্দের বন্যা, সময়ের আবর্তে সেই সন্তানের পড়াশুনা, ভাল স্কুলে ভর্তি নিয়ে সৃষ্টি হয় অনাকাংক্ষিত ও জটিল অবস্থা। যার প্রথম শিকার হয় হাজারো কোমলমতি অবুজ শিশুরা। তারা জানেনা তাদের অপরাধ। কিন্তু এটা জানে যে পরীক্ষায় ভাল রেজাল্ট করতে পারেনি। পারেনি ভাল স্কুলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে। আর এটাই যখন সমস্যার মূল কারণ কথন কোমলমতি ফুটফুটে শিশুদের মনে পড়া-শুনার প্রতি জন্মনেয় অনিহা এবং পেয়ে বসে স্কুল ভীতি।

ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ জীবনে বয়ে চলা এ ব্যধীকে দূর করার লক্ষ্য ও মানসে বিশেষ করে ছোট ছোট কোমনমতি শিশুদের নিকট শিক্ষা ব্যবস্থাকে আনন্দদায়ক এবং স্কুল ভীতি দূর করার লক্ষ্য নিয়েই গতানুগতিক শিক্ষা ব্যবস্থার এ ধারাকে পরিহার করে গঠনমূলক সৃজনশীল এক কথায় এক ব্যতিক্রমধর্মী শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ ও রাষ্ট্রের চাহিদার নিয়ামক হিসাবে “পরশমণি ল্যাবরেটরী স্কুলের” প্রতিষ্ঠা ও এর পথ চলা।

আমরা গড়ি শ্রেষ্ঠস্কুলে ভর্তির জন্য এবং সুশিক্ষায় শিক্ষিত ও তৃণমূল পযার্য় থেকে মজবুত ভিত্তি গড়ে দেয়াই আমাদের অংগীকার। আমাদের এ স্লোগানকে স্বল্প সময়ের পথচলায় আমরা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। আল্লাহর অশেষ রহমত ও কৃপায় আমরা আমাদের স্বপ্ন এবং বাস্তবতার খুবই কাছাকাছি পৌছতে পেরেছি। যার কারনে কোন পোষ্টার, ব্যানার, লিফলেট, প্রচার প্রচারনা ছাড়াই পরশমণি ল্যাবরেটরী স্কুলের প্রতি সচেতন গার্ডিয়ানদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে যেমন সক্ষম হয়েছি। তেমনি আশানুরূপ রেজাল্ট করে ব্যতিক্রম ধর্মী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে পরশমণিকে সকলের নিকট পরিচিত করতে সক্ষম হয়েছি।

বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্হার জটিলতার মূলে রয়েছে শিক্ষার্থীদেরকে শ্রেণীকক্ষ পাঠদানে আগ্রহী করার পরিবর্তে বাসায় / কোচিং ক্লাশে পড়াতে বেশী আগ্রহী করা। আমাদের এ প্রতিষ্ঠানে বাসায় পাইভেট বা কোচিং পড়ানো নিষেধ।

এছাড়া প্রত্যেক গার্ডিয়ানদের ইচ্ছা তার সন্তান যেন পরীক্ষায় প্রথম স্থান লাভ করতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে গার্ডিয়ান জানেনা তার সন্তানের ধারণ ক্ষমতা কতটুকু। যার ফলশ্রুতীতে ছোট ছোট কচি বাচ্চাদের উপর চলে এক ধরণের নিপিড়ন। আমাদের এ প্রতিষ্ঠানে এ অসুস্থ প্রতিযোগীতা পরিহার করে বাচ্চাদের মূল ভিত্তি যাতে মজবুত হয় সে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

পরশমণি ল্যাবরেটরী স্কুলের মূল বৈশিষ্ট্যসমূহ:

  • সেরা স্কুলে ভর্তি : ছাত্র-ছাত্রীদেরকে রাজউক স্কুল এন্ড কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল, আইডিয়াল ও হলিক্রস সহ ঢাকার সেরা স্কুলগুলোতে ভর্তিযোগ্য করে গড়ে তোলা হয়।
  • পৃথক বালক-বালিকা শাখা : প্লে শ্রেণি থেকেই বালক এবং বালিকাদের পৃথক শাখায় ক্লাশ নেয়া হয়।
  • গৃহ শিক্ষকের প্রয়োজন হয় না : স্কুল সময়ের পরে সবল ও দুর্বল ছাত্র-ছাত্রীদের আলাদা ব্যাচে সপ্তাহে ৫ (পাঁচ) দিন প্রাইভেট পড়ানো হয়। যার বিপরীতে কোন ফি নেয়া হয় না। ফলে ছাত্র-ছাত্রীদের বাসায় কোন গৃহ শিক্ষকের প্রয়োজন হয় না। মা-বাবাকে পড়ানোর অনুমতিও দেওয়া হয় না। এমনকি সন্তানকে বার বার পড়তে বস, পড়তে বস এ কথাটা বলাও সম্পূর্ণ নিষেধ।
  • ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক : শ্রেণিকক্ষে বেত ব্যবহার করা হয় না বিধায় ছাত্র ও শিক্ষকের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের সমস্যার কথা অকপটে শিক্ষকদের নিকট ব্যক্ত করতে পারে। এর ফলে শ্রেণিকক্ষেই সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।
  • দুবর্ল ছাত্র-ছাত্রীদের বিশেষ তত্ত্বাবধান : যে সকল ছাত্র-ছাত্রী ৮০% এর কম নম্বর পায় তাদের দৈনিক প্রতিবেদন কার্ড এবং ডায়েরী অধ্যক্ষ সাহেব স্বয়ং চেক করে থাকেন।
  • ডায়েরী ব্যবহার : প্রতিদিন বিষয়ভিত্তিক পড়া আদায় শেষে ডায়েরীতে Yes/No মন্তব্য লেখা শিক্ষকদের জন্য বাধ্যতামূলক বিধায় সম্মানিত অভিভাবকবৃন্দ সহজেই তাদের সন্তানের পড়াশুনার অগ্রগতি সম্পর্কে অবগত হতে পারেন।
  • হ্যান্ডনোট : ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বাজারের প্রচলিত কোন নোট বা গাইড বই ব্যবহার করতে দেয়া হয় না। সকল বিষয়ভিত্তিক কম্পিউটার কম্পোজ করা উন্নতমানের হ্যান্ডনোট বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিনামূল্যে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রদান করে থাকেন। ফলে মা বাবাকে সামান্যতম দুশ্চিন্তাও করতে হয় না।
  • দৈনিক প্রতিবেদক কার্ড : বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক উদ্ভাবিত বিশেষ বৈশিষ্ট্যমন্ডিত দৈনিক প্রতিবেদন কার্ড (১২ মাসে ১২টি) এর মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীরা দৈনিক কত ঘন্টা পড়াশুনা করে তা অবগত হন এবং উক্ত কার্ড ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও স্কুল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রতিদিন স্বাক্ষরিত হয় বিধায় অমনোযোগী ছাত্র-ছাত্রীরাও বাসায় নিয়মিত পড়াশুনায় মনোযোগী হয়ে উঠতে বাধ্য হয়।
  • সুন্দর হাতের লেখা তৈরিতে ব্যতিক্রমধর্মী খাতা : বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বিশেষ পদ্ধতিতে ছাপানো ব্যতিক্রমধর্মী খাতা ব্যবহার করা হয়। বিধায় ছাত্র-ছাত্রীরা সহজেই সুন্দর হাতের লেখা লিখতে পারদর্শী হয়ে ওঠে। নিজস্ব প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি বিশেষ কার্ড যা হাতের লেখা সুন্দর করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
  • শিক্ষাদান পদ্ধতি : বছরের শুরু থেকে নিজস্ব পদ্ধতিতে সকল বিষয়ে হ্যান্ডনোট সহ পাঠদান করানো হয় বিধায় ছাত্র-ছাত্রীরা সারা বছর চাপমুক্ত থেকে পড়াশুনা করে থাকে এমনকি বারবার রিভিশনের সুযোগ পায়।
  • পরীক্ষা পদ্ধতি : প্রতিটি অধ্যায় শেষে ২০ নম্বরের সি.টি পরীক্ষা, প্রতিটি সাময়িকের একমাস পূর্বে পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসের উপর ৩০ নম্বরের ১টি টিউটোরিয়াল পরীক্ষা এবং প্রদত্ত সিলেবাস মোতাবেক ১০০ নম্বরের সাময়িক পরীক্ষা নেয়া হয়। উল্লেখ্য যে, বার্ষিক পরীক্ষা পুরো বইয়ের উপর হয়ে থাকে।
  • উত্তরপত্র মূল্যায়ন পদ্ধতি : উত্তরপত্র মূল্যায়নের কোন নম্বর কাটা হলে, তার কারণ মন্তব্য আকারে লেখা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য বাধ্যতামূলক বিধায় কি ভুল হয়েছে তা ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবকরাও সহজেই বুঝতে ও জানতে পারেন।
  • উত্তরপত্র অভিভাবকদের প্রদর্শন : বার্ষিক পরীক্ষাসহ সকল পরীক্ষার উত্তরপত্র ছাত্র-ছাত্রী ও সম্মানিত অভিভাবকদের দেখানো হয়। এতে ছাত্র-ছাত্রীগণ তাদের ভুল সংশোধন এবং উত্তরোত্তর উন্নতি লাভের সুযোগ পায়।
  • অভিভাবক মিটিং : প্রতিটি সাময়িক পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে অভিভাবক ও শিক্ষক-শিক্ষিকা সমন্বয়ে ক্লাশ ওয়ারী মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় সকল অভিভাবক যে কোন ধরণের গঠনমূলক আলোচনা করার সুযোগ পান। অভিভাবকদের সকল প্রকার গঠনমূলক পরামর্শ সাদরে গ্রহণ করা হয়।
  • ছাত্র-ছাত্রীদের ছুটি গ্রহণ : স্কুলে অনুপস্থিতির জন্য বিদ্যালয় কর্তৃক নির্ধারিত Leave কার্ড এর মাধ্যমে কারণ দর্শিয়ে ছুটি মণ্জুর ও অগ্রিম ছুটি নিতে হয়।
  • সহি কোরআন তেলাওয়াত : প্রথম শ্রেণি থেকেই যাতে শুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত শিখতে পারে সে জন্য নূরানী পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হাফেজ ও আলেম (ধর্মীয় শিক্ষক) দ্বারা ছাত্র-ছাত্রীদের প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলা হয়।
  • বাধ্যতামূলক কম্পিউটার ও Spoken English : প্রথম শ্রেণি থেকে সকল শ্রেণিতেই কম্পিউটার ও Spoken English শিক্ষা বাধ্যতামূলক।
  • নিরাপত্তা : সার্বক্ষণিকভাবে নিয়োজিত নিরাপত্তা প্রহরীর মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।
  • টিফিন : একমাত্র বাসায় তৈরি খাবারই স্কুলে টিফিন হিসেবে গ্রহনযোগ্য এবং উক্ত টিফিন একজন দায়িত্বশীল শিক্ষকের উপস্থিতিতে শ্রেণিকক্ষে সম্পূর্ণ শেষ করানো হয়। [হোটেল কিংবা ফাস্টফুডের খাবার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।]
  • বিশুদ্ধ পানি : বিদ্যালয় থেকে ১০০% বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ করা হয়।
  • পরিবহন : দূর-দূরান্তের ছাত্র-ছাত্রীদের বিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহনে (ভ্যান ও মাইক্রোবাস) আসা-যাওয়া করার সুযোগ রয়েছে।
  • বিদ্যালয়ের কার্যক্রম : সপ্তাহে ৬ (ছয়) দিন ক্লাশ চলে। বৃহস্পতিবার অর্ধ দিবস এবং শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি।
  • শিক্ষা সফল ও বনভোজন : ছাত্র-ছাত্রীদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশ ও বাস্তব জ্ঞানার্জনের জন্য প্রতিবছর শিক্ষা সফর ও বনভোজন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।